লক্ষ্মীপুরে ব‍্যাংক কর্মচারী মোকতারের নেশার টাকা জোগাতে সন্তান বিক্রি!

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের কর্মচারী মোকতার হোসেন। নেশাখোর বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে বছর খানেক আগে শখের বশে ফেন্সিডিল সেবন করেছিলেন। এরপর মাঝে মধ্যে খেতে শুরু করে গত ছয় মাস ধরে পুরোপুরি আসক্ত হয়ে পড়েছে। এখন ফেন্সিডিলের পাশাপাশি ইয়াবাও সেবন করেছে। নেশার টাকা জোগাতে স্ত্রী সহ পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে অত‍্যাচার করছে। কোন উপায় না দেখে পুলিশের সহায়তা কামনা করেন।

জানা গেছে, বাবু ও সুমন নামের দুই বন্ধু গত বছরের শেষের দিকে মোকতারকে ফেন্সিডিল সেবন করায়। তারপর প্রায়ই তাদের সাথে সাক্ষাত করে একসাথে নেশা করতো। গত ছয় মাস ধরে নিয়মিতভাবে ফেন্সিডিল খাওয়া শুরু করে। পাশাপাশি ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়েছে।

এদিকে ব‍্যাংকের ছোট কর্মচারী হিসেবে বেতন যা পেত তার সব নেশায় খরচ করায় বাচ্চার খাবার কেনার টাকাও তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে আনতে হয়। ক্রমে আসক্তি বাড়ার কারনে নেশার টাকা জোগাড়ে ব‍্যাংকের বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা ধারসহ কাস্টমারদের কাছ থেকে বখশিশ আদায় শুরু করে।
আবদুল হামিদ নামে এক ব‍্যবসায়ী অভিযোগ করেন যে লোন দেয়ার নামে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছে মোকতার।

মোকতারের স্ত্রী অভিযোগ করেন যে, গত এক সপ্তাহ থেকে ব‍্যাংকের কারো কাছ থেকে টাকা জোগাড় করতে না পেরে তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার চাপ দেয়। গতকাল তার স্ত্রী টাকা আনতে অস্বীকৃতি জানালে সোবহান নামে এক ব‍্যক্তির সাথে ৬০ হাজার টাকায় তার শিশু বাচ্চাকে বিক্রি করবে বলে ১০ হাজার টাকা অগ্রিম নেয়। আজ সকালে বাচ্চার ক্রেতা সোবহান বাচ্চা নিতে এলে তার স্ত্রী কৌশলে বাড়ি থেকে বাচ্চা সহ পালিয়ে থানায় অভিযোগ জানায়।

রামগঞ্জ থানার ওসি তোতা মিয়া জানান, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
এদিকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোকতারের পরিবার তার স্ত্রীর উপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে জানা গেছে। তারা মোকতারকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তির কথাও বলেছে।

লক্ষ্মীপুরের যুবলীগ নেতা নোমানকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে বলে জানান।
স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হোসেন আহমদ বলেন, মোকতারের নেশাখোর হওয়ার কথা লোকমুখে শুনেছি কিন্তু বাচ্চা বিক্রি করতে চাইবে এটা ভাবি নাই।
আলাউদ্দিন নামে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা জানান, তিন চার মাস আগেও সে তার বোনের ছেলেকে অত‍্যাচারের হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করেছে।

থানা পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গেছে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।